টাকা পে কার্ড ফোকাস রাইটিং - Taka Pay Card Focus Writing/Essay
🟥 টাকা পে কার্ড কি?
টাকা পে (TakaPay) কার্ড হচ্ছে একটি Bank Debit Card যেটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব National Payment Switch Bangladesh (NPSB) এর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এর ফলে কার্ডটি শুধুমাত্র দেশের অভ্যন্তরে ব্যবহার করা যাবে। তবে ভবিষ্যতে ভারতে ও সৌদি আরবে ব্যবহার চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এতদিন আমরা যে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আসছি এগুলো পরিচালিত হত, আন্তর্জাতিক Visa অথবা Mastercard এর নেটওয়ার্কে। আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার কারণে প্রতি বছর ব্যাংকগুলোকে খরচ করতে হয় অনেক বৈদেশিক মুদ্রা।
তাই বৈদেশিক মুদ্রার উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকদিন ধরেই এমন একটি নিজস্ব কার্ড চালু করার চেষ্টা করছিল।
টাকা পে কার্ড প্রস্তুতকারক ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Fime এর সাথে ৬ বছরের জন্য চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই ধরণের নিজস্ব বা Local Debit Card এর ব্যবহারের ধারণা কিন্তু বাংলাদেশেই প্রথম নয়। বিশ্বের প্রায় বেশিরভাগ দেশেই, লোকাল ডেবিট কার্ড ব্যবহার হয়ে আসছে। যেমন, ভারতের RuPay, শ্রীলঙ্কার LankaPay, পাকিস্তানের PakPay , সৌদি আরবের Mada ইত্যাদি।
🟥 টাকা পে কার্ডের সুবিধাঃ
TakaPay কার্ডের সুবিধা হচ্ছে:
◼ ব্যাংকগুলোকে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হবে না;
◼ দেশের অভ্যন্তরে লেনদেন ও কেনা কাটা করা যাবে।
◼ যে কোন ব্যাংকের এটিএম বুথ ব্যবহার করা যাবে।
◼ কার্ড ব্যবহারের খরচ তুলনামূলক কম হবে;
◼ একটি মাত্র কার্ড দিয়েই একাধিক একাউন্ট হতে টাকা উত্তোলন করা যাবে।
◼ ডেবিট কার্ড ব্যবহার চার্জ কমে যাবে।
◼ নিজেদের ইচ্ছামত কাষ্টম সুবিধা যোগ করে লেনদেন আরও সহজ করা হবে।
◼ ডেবিট কার্ডের বার্ষিক চার্জ কমে যাবে।
◼ অন্যান্য দেশের সাথে চুক্তিসাপেক্ষে সেইসব দেশেও লেনদেন করা যাবে।
টাকা-পে কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এই কার্ড ব্যবহারের জন্য ডলার খরচ করতে হবে না। যেখানে এখন আন্তর্জাতিক কার্ডগুলো ব্যবহারের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয়।
তাছাড়া, যেহেতু এটি বাংলাদেশের নিজস্ব পেমেন্ট নেটওয়ার্ক NPSB এর মাধ্যমে এই কার্ড পরিচালিত হবে। তাই, এই টাকা পে কার্ডের ফি কম হবে। ফলে গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহার করার ফি কম হবে।
কিন্তু সবাই কি এই কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন? না, তার কারণ হলো টাকা পে কার্ডের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আসুন জেনে নিই টাকা পে কার্ডের সীমাবদ্ধতা বা অসুবিধাগুলো কি।
🟥 টাকা পে কার্ডের অসুবিধাঃ
টাকা পে কার্ডের অসুবিধা হলো,
◼ এটি একটি Local Debit Card, দেশের বাইরে ব্যবহার করা যাবে না।
◼ International E Commerce site থেকে কেনাকাটা করা যাবে না।
আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা ডুয়েল কারেন্সি কার্ড ব্যবহার করেন যেটা দেশের বাইরেও ব্যবহার করা যায়, তারা এই টাকা পে কার্ড ব্যবহার করে দেশের বাইরে লেনদেন করতে পারবেন না, বা ইন্টারন্যাশনাল কোন পেমেন্ট করতে পারবেন না।
তাই, Visa, Mastercard, American Express এই কার্ডগুলোর ব্যবহার করতেই হবে যদি আপনি দেশের বাইরেও লেনদেন করতে চান।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
অন্য ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে টাকা পে কার্ড চালু করবে। শুরু থেকেই দেশের সব এটিএম, পয়েন্টস অব সেলস ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে। শুরুতে এটি ডেবিট কার্ড হিসেবে ব্যবহার করা গেলেও ভবিষ্যতে টাকা পে ক্রেডিট কার্ডও আসবে। এই কার্ডের নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হচ্ছে ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ। তবে এখন সব ব্যাংকের কার্ডেই বাড়তি নিরাপত্তা সংবলিত নতুন ইএমভি প্রযুক্তি চালু হয়েছে। ধীরে ধীরে টাকা পে কার্ডও ইএমভি প্রযুক্তি আনা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, প্রাথমিকভাবে ব্যাংকগুলো পাইলট ভিত্তিতে টাকা পে কার্ড চালু করবে। ফ্রান্সের পরামর্শ প্রতিষ্ঠান ‘ফাইম’ কার্ডটি তৈরি করেছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমে আসবে। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সেবা মাশুল বাবদ অনেক অর্থ খরচ করতে হয়।
🟥 TakaPay কার্ড কোথায় ও কিভাবে পাওয়া যাবে?
আপাতত শুধুমাত্র ৮ টি ব্যাংক প্রাথমিকভাবে TakaPay কার্ড ইস্যু করতে পারবে। তাই টাকা পে কার্ড পেতে হলে নিম্মোক্ত ৮টি ব্যাংকে আপনার একাউন্ট থাকতে হবে:
1. Brac Bank
2. Islami Bank
3. Eastern Bank
4. Sonali Bank
5. UCB Bank
6. City Bank
7. Dutch Bangla Bank
8. Mutual Trust Bank
উপরোক্ত লিস্টের ব্যাংকগুলোতে একাউন্ট থাকলে, আপনি TakaPay Debit Card এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনার পূর্বের নেয়া কোন ডেবিট কার্ড থাকলে তা জমা দিয়ে দিতে হবে। এসব ব্যাংকে নতুন একাউন্ট খুললেও আপনার ডেবিট কার্ড হিসেবে TakaPay কার্ড নিতে পারবেন।
Tags
Essay