শেষের কবিতা pdf | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর pdf | Shesher Kabita pdf

শেষের কবিতা pdf | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর pdf | Shesher Kabita pdf


শেষের কবিতা উপন্যাস রিভিউ:
শেষের কবিতা নামটা শুনলেই মনে হয় যেন এটি কবিতার বই। আসলে এটি রবীন্দ্রনাথের একটি কাব্যধর্মী রোমান্টিক উপন্যাস।রোমান্টিকতার দিক থেকে বাংলা সাহিত্যে এই উপন্যাসটি বরাবরই প্রথম কাতারে অবস্থান করেছে। যেটির মধ্যে প্রেমের দুটি স্বরূপকে খুব স্পষ্ট করে প্রকাশ করা হয়েছে।

উপন্যাসের মূল চরিত্র হল অমিত ও লাবণ্য।অমিত বিদেশ থেকে ব্যারিস্টার হয়ে ফিরেছে। দেখতে সুদর্শন, বুদ্ধিমান, পোষাকেও বেশ একটা ভালো মান মেইন্টেইন করে সে। কিন্তু পেশায় উকিল হলেও অমিত খুব সাহিত্যপ্রেমী একজন মানুষ।কবিতা তার বিশেষ পছন্দের জিনিস। অমিতের চরিত্র বুঝাতে কবি এক কথায় বলেছেন-

 “টানে সবাইকে, কিন্তু বাঁধনে জড়ায় না”

পাহাড়ের দেশ শিলং-এ ঘুরতে গিয়ে অমিতের পরিচয় হয় লাবণ্যের সাথে। লাবণ্য খুব সাধারণ গরীব মধ্যবিত্ত মন মানসিকতার মেয়ে। শহুরে মেয়েদের মত রঙ ঢঙ্গের বাহার নেই তার মাঝে। অদ্ভুত সরল সে। সেই সাথে আত্মমর্যাদাশীল।অন্য দশটা মেয়ে থেকে লাবণ্যের এই আলাদা দিকগুলোই সবাইকে মুগ্ধ করে। অমিতও মুগ্ধ হয়ে ভালোবেসে ফেলে লাবণ্যকে।


অপর দিকে অমিতের বোন সিসির বন্ধু কেতকীর সঙ্গে বিলেতে থাকার সময় অমিতের একটা গভীর মুগ্ধতার সম্পর্ক ছিল এবং সে সময়টাতে অমিত কেতকীকে ভালোবেসে আংটি পরিয়েছিল,তাই লাবণ্যর সঙ্গে অমিতের সম্পর্কের খবর শুনে কেতকী চেরাপুঞ্জি থেকে শিলং চলে আসে এবং অমিতকে নিজের বলে দাবী করে।ফলে ভেঙ্গে যায় লাবণ্য – অমিতের বিবাহ আয়োজন।তার বদলে অমিতের সাথে বিয়ে হয় কেতকীর।উপন্যাসের শেষের অংশে লাবণ্য অমিতকে একটা চিঠি পাঠায়। সেটির এক পৃষ্ঠায় ছিলো লাবণ্য ও শোভনলালের বিয়ের খবর,  অন্য পৃষ্ঠায় একটি সুদীর্ঘ কবিতা এবং সেটিই হলো শেষের কবিতা।




এই উপন্যাসে যে বিষয়টা গভীরভাবে লক্ষণীয় সেটি হলো : ভালোবাসার মানুষকে না পাওয়া।কারণ পেয়ে গেলে সেই প্রেম আর অম্লান থাকে না, সেটি ম্লান হয়ে  যায়।

১৯২৮ সালে লেখা হয়েছিল শেষের কবিতা, ১৯২৯ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
শেষের কবিতা প্রকাশের ৮০-বছর পরে আবার পড়লাম উপন্যাসটি। একটি স্থির মূল্যাঙ্কনের জন্যে। আগে উপন্যাসটি বিষয়ে দোমনা ভাব ছিল আমার। সম্পূর্ণ প্রতীপ দ্বৈধতা। কখনাে মনে হয়েছে ‘কিছুই হয়নি!’, কখনাে ‘ওহ! অসাধারণ! সুস্থ বিশ্লেষণে মনে হয়েছে, শেষপর্যন্ত অভিনব ও অসাধারণ শব্দদ্বয় প্রযােজ্য। শেষের কবিতা
পুনর্পাঠে স্পর্শ করল, চোখ ভিজে উঠল—এ কী উপন্যাসের সাফল্যের দেদীপ্যমান সাক্ষ্য নয়? বইটি পড়েছি এবারের আগে অনেকদিন ধরে অনেকবার। এজন্যেই বােধহয় রবার্ট ফ্রস্ট ওকতাবিয়াে পাজ-কে একটি গ্রন্থের পুনপুনর্পাঠের কথা বলেছিলেন। এখন যেন অবশেষে আচ্ছাদ সরে গেল।
উপন্যাসটিতে অন্তঃপ্রবেশের আগে প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্য সাজিয়ে দিতে চাই।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের আমন্ত্রণ রক্ষা করে ব্যাঙ্গালােরে ছিলেন কয়েক সপ্তা। রবীন্দ্রনাথের বয়স তখন ৬৭। সেখানেই শুরু ও শেষ করেন শেষের কবিতা। যােগাযোেগ উপন্যাসও সমাপ্ত হয় ওখানেই। শেষের কবিতায় খসড়ার উপন্যাসের নাম ছিল ‘মিতা’-লাবণ্য যে-নামে ডাকত অমিতকে। ১৩৩৫এর ভাদ্র থেকে চৈত্র মাসে ধারাবাহিক প্রকাশিত হয় প্রবাসী
পত্রিকায়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত ১৯২৯ সালে। ১৯৪৯ সালে লন্ডনে শেষের কবিতা ইংরেজিতে অনূদিত হয়ে প্রকাশিত হয়। অনুবাদক কৃষ্ণ কৃপালনী। শিরােনাম দেওয়া হয় : Farewell, My Friend।
এই উপন্যাসের প্রাথমিক পটভূমি তৈরি হচ্ছিল বিংশ শতাব্দীর বিশের দশক থেকে। রবীন্দ্রনাথ এই দশকে উপর্যুপরি বিদেশ সফর করছিলেন। তারই মধ্যে ১৯২৩ সালে বেরিয়েছিল কল্লোল, ১৯২৬ সালে কালিকলম, ১৯২৭ সালে প্রগতি। তিনটিই
রবীন্দ্রোত্তর আধুনিক সাহিত্যের বাহক হয়ে উঠেছিল। প্রকৃতার্থে এরা করেছিল রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘােষণা। রবীন্দ্রনাথ তখন ষাটোত্তর। অ-রাবীন্দ্রিক কবিতা রবীন্দ্রসমকালেও লিখেছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, প্রমথ চৌধুরী, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত প্রমুখ।
প্রতি-রাবীন্দ্রিক কবিতা ও গদ্যরচনা বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকেই শুরু হয়।


কথাসাহিত্যে শরৎচন্দ্রকেও প্রতি-রাবীন্দ্রিকের দলেই ফেলতে হবে—যদিও তিনি তদানীন্তন ‘অতি-আধুনিক’ লেখকদেরও সমর্থক ছিলেন না। যেমন বলব, যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত ও মােহিতলাল মজুমদার। এঁরাও প্রতি-রাবীন্দ্রিক ছিলেন, কিন্তু অতি-আধুনিকদের প্রতি পরাঙ্মুখ ছিলেন। নজরুল ইসলামকে শেষ-বিশ্লেষণে প্রতি- রাবীন্দ্রিকই বলব। এসবের দ্বারা আমূল আলােড়িত হয়েছিলেন সংবেদী রবীন্দ্রনাথ।


শেষের কবিতায়, আরাে বেশকিছু কবিতায় ও নাটকে, বিশেষত শেষের কবিতায় আছে এর চিত্রণ। শেষের কবিতা-য় নায়কোচিত নায়ক অমিত এরকমই একজন প্রতি- রাবীন্দ্রিক—একই সঙ্গে রৈবিক কল্প-প্রতিনিধি। এখানেই উল্লেখ করা উচিত, এর পরে-পরেই কিন্তু বাংলা উপন্যাস দখল করে অ-নায়ক নায়কেরা। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
নৌকার একজন মাঝিকে নিয়ে, তারাশঙ্কর গ্রামের একজন কবিয়ালকে নিয়ে, বিভূতিভূষণ গ্রামের একটি বালককে নিয়ে অপরূপ সব উপন্যাস লিখলেন। শরৎচন্দ্রের পল্লীসমাজ-এও এদের দেখা পাওয়া যাবে না। বাংলা সাহিত্যের নতুন সব ইমারত তৈরি হতে লাগল—কবিতায় ও কথাসাহিত্যে।
১৯২৭ সালে রবীন্দ্রনাথ দুটি প্রবন্ধ লেখেন। সাহিত্যধর্ম’ ও ‘সাহিত্যে নবত্ব।
প্রবন্ধযুগ অতি-আধুনিকতার প্রতি একটুও অনুকম্পায়ী ছিল না। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যধর্ম” প্রকাশিত হইবার পর, নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত লিখিলেন “সাহিত্যধর্মের সীমানা”; তার জবাব লেখেন দ্বিজেন্দ্র বাগচী “সাহিত্যধর্মের সীমানা-বিচার”; তার পাল্টা জবাব দিলেন নরেশচন্দ্র “সাহিত্যধর্মের সীমানা-বিচারের উত্তর লিখিয়া। ইতিমধ্যে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এই বিতর্কে অবতীর্ণ হইয়া লেখেন “সাহিত্যের রীতিনীতি”।


এইসব তর্ক যখন দেশে চলিতেছে, তখন কবি মালয় হইতে “সাহিত্যে নবত্ব” প্রবন্ধটি লিখিয়া (২৩ অগাস্ট) প্রবাসী-তে পাঠাইয়া দেন।’ (প্রভাতকুমার মুখােপাধ্যায়) নজরুল ইসলাম, অমল হােম প্রমুখও ঐ প্রতর্কে অংশগ্রহণ করেছিলেন। অমিত রায়ের চরিত্রচিত্রণের মধ্য দিয়ে একটু হলেও-না, ভালােরকমই—ঐ সময়ের ছায়াসম্পাত আছে। তাই বলে ওটিই একমাত্র নয়। রচনাকালটি পুনঃস্মরণীয় : ১৯২৮।
শেষের কবিতা-কে কেন সাধারণত্ব-ছাড়িয়ে-যাওয়া উপন্যাস বলছি, তার সারাৎসার সঞ্চয় করা যাক।
প্রথম প্রশ্নই তুলতে চাই : এরকম কোনাে উপন্যাস কি বাংলা ভাষায় পড়েছি আমরা?—চন্দ্রশেখর মুখখাপাধ্যায়ের উদ্ভ্রান্ত প্রেম এ নয়; বঙ্কিমচন্দ্র-শরৎচন্দ্রের প্রেমিকতার সঙ্গে নৈতিকতা বা সমাজপটের বিরােধও অনুপস্থিত এখানে; এমনকি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের চোখের বালি তাে বটেই—অব্যবহিত আগের যােগাযােগ উপন্যাসের
মধুসূদন-কুমু-র সমস্যা আর অমিত-লাবণ্যের সমস্যা বিভিন্ন । এ সমস্যার ব্যবধি আকাশ-পাতাল। লাবণ্য যদি মধুসূদনের হাতে পড়ত, তারও হতাে একই হাল। কুমু আর লাবণ্য দুজনই রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক কবিতাগ্রন্থ মহুয়া-র ‘সবলা’ কবিতার ব্যক্তিত্বময়ী নারী। মাইকেলের মেঘনাদবধ কাব্যের সীতা ও প্রমীলা চরিত্রে, বীরাঙ্গনা কাব্যের নারীবৃন্দে, প্রথম দেখলাম আমরা ব্যক্তিত্বশালিনীদের আবির্ভাব। রবীন্দ্রনাথের গল্প-উপন্যাস-নাটকের অনেক নারীচরিত্রের কথাই মনে পড়বে আমাদের—যারা অসামান্য ব্যক্তিত্বময়ী।



শেষের কবিতা বই রিভিউঃ
বিশ্বকবি, কবিগুরু, মননের গুরু, আমার রবিদার উপন্যাস, শেষের কবিতার একটি অংশ বিশেষ এটি। অমিত-লাবণ্যের প্রেমময় সময়গুলোকে যুগলবন্দী করে রাখা ইচ্ছেগুলোকে কবিগুরু সমর্পণ করেছেন তাঁর শেষের কবিতায়।

বইটি শুরু হয়......
উপন্যাস শুরু হয় নায়ক চরিত্রের অমিত রায়কে দিয়ে, যার বাবা ছিলেন ব্যারিস্টার। অমিত রায়-ও নিজের বাবার মতো ব্যারিস্টার। অক্সফোর্ড এর ছাত্র, পড়াশোনার পার্ট মোটামুটি চুকিয়ে অমিত ফিরে আসে দেশে। তারপর দেশে আসার পর শুরু হয় বিয়ের তোড়জোড়! অমিতের পরিবার বেশ ভাল ভাবে ধরে অমিতকে বিয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু বিয়ের ইচ্ছা থাকলেও বিয়ে করতে ঠিক রাজি নয় অমিত।

কারণ বিলেতে পড়াশোনা করে আসলেও অমিতের মত সুক্ষ্ম আর মার্জিত রুচিবোধের ছেলের বিয়ে করার জন্য মেয়ে ঠিক পছন্দ হয়না। অমিতের আশেপাশে অবশ্য মেয়েদের ভীড় কম নেই। তবে এরা সবাই আধুনিক হওয়ার এতো কম্পিটিশনে নেমেছে যে অমিত ঠিক নিজের মনের মানুষটাকে খোঁজে পাচ্ছিলনা। অন্যদিকে অমিতের দুই বোন ‘সিসি’ ও ‘লিসি’ নাম শোনে বুঝে নেয়া যায় এরা কোন পর্যায়ের আধুনিক! ভাইয়ের ঠিক উল্টো!



আধুনিকতার ছোঁয়ায় এদের যেন ঠিক মতো চিনতে পারেনা অমিত রায়। যাইহোক, ভাগ্যের কোন এক যোগসূত্রে অমিত ঘুরতে যায় শিলঙ পাহাড়ে। বিষন্নতায় কাটল অমিতের কিছুটা দিন শিলঙে। তারপর.... দেখা হয় ‘লাবণ্যের’ সাথে! রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসে যার নাম লাবণ্য, বুঝে নেয়া যায় সে কতটা লাবণ্যময়ী!


বইয়ের বিবরণ
বইয়ের নামঃ শেষের কবিতা
লেখকঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২০১ টি।
ক্যাটেগরিঃ উপন্যাস বই
পিডিএফ সাইজঃ ৩ মেগাবাইট প্রায়।



Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form