সে এসে বসুক পাশে PDF || সাদাত হোসাইন
'আমার যে একটা বিয়ে হয়েছিল, এই পরিচয়টা কি কখনো মুছে ফেলা যাবে? যাবে না।'
‘আজাদ বলল, ‘জীবনভর ভুল মানুষের কারণে আমাদের জীবনে অসংখ্য ভুল হয়। সেই ভুল থেকে ক্ষত তৈরি হয়। কিন্তু সময় সেই ক্ষত ক্রমশই মুছে দিতে থাকে। আর আমরা যারা বোকা তারাই কেবল সেই ক্ষতগুলো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আবার দগদগে ঘায়ে রূপান্তরিত করি। তাকে শুকাতে দেই না।’
‘কিন্তু সময় যদি কারো ক্ষত শুকিয়ে দিতে না পারে? যদি তা দুঃসহ স্মৃতি হয়েই থেকে যায়?’
‘তাহলে সেটি মোছার ব্যবস্থা করতে হবে।’
‘কীভাবে মুছব?’
‘অনেক অনেক ভালো স্মৃতি তৈরি করে। ঘরের দেয়ালে নোনা ধরলে কিংবা পলেস্তরা খসে গেলে আমরা কী করি? তেমনই রেখে দেই? যাতে ধীরে ধীরে পুরো বাড়িটাই নষ্ট হয়ে যায়?’ ‘উহু।’
‘তাহলে? আমরা তাকে ধুয়ে মুছে নতুন রঙ করি। যাতে সেই নোনা ধরা দেয়াল ঝলমলে হয়। নষ্ট হয়ে না যায়। জীবনও তেমনই। এখানেও এর দেয়ালজুড়ে অসংখ্য ক্ষত তৈরি হয়, নোনা ধরে। সেসব ধুয়ে মুছে নতুন রঙ না করলে তা আরও বাড়ে। বাড়তেই থাকে। তারপর নষ্ট করে ফেলে পুরো জীবনটাই।’
‘ঘরের দেয়াল রঙ করা যায়, জীবনের না। কারণ, জীবনের রঙ কোথাও কিনতে পাওয়া যায় না।’
‘যায়। কিন্তু আমরা তা কিনতে জানি না।’
‘কীভাবে?’
‘জীবনের রঙ হলো ভালো মুহূর্ত, সুন্দর স্মৃতি। দ্যা বিউটিফুল মোমেন্ট অ্যান্ড দ্যা বিউটিফুল মেমোরিজ। তুমি জীবন জুড়ে যত বেশি ভালো স্মৃতি তৈরি করতে পারবে, তত বেশি ওই নোনা ধরা খারাপ মেমোরিজগুলো ঝাপসা হয়ে যেতে থাকবে। ক্ষতগুলো শুকিয়ে যেতে থাকবে।’
Title | সে এসে বসুক পাশে |
Author | সাদাত হোসাইন |
Publisher | অন্যধারা |
Edition | 1st Published, 2023 |
Number of Pages | 272 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
সাদাত হোসাইন
স্নাতকোত্তর, নৃবিজ্ঞান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। সাদাত হোসাইন নিজেকে বলেন গল্পের মানুষ। তাঁর কাছে চারপাশের জীবন ও জগত, মন ও মানুষ সকলই গল্প। তিনি মনে করেন, সিনেমা থেকে পেইন্টিং, আলোকচিত্র থেকে ভাস্কর্য, গান থেকে কবিতা- উপন্যাস-নাটক, সৃজনশীল এই প্রতিটি মাধ্যমই মূলত গল্প বলে। গল্প বলার সেই আগ্রহ থেকেই একের পর এক লিখেছেন- আরশিনগর, অন্দরমহল, মানবজনম, নিঃসঙ্গ নক্ষত্র, নির্বাসন, ছদ্মবেশ, মেঘেদের দিন ও অর্ধবৃত্তের মতো তুমুল জনপ্রিয় উপন্যাস। ‘কাজল চোখের মেয়ে’, তোমাকে দেখার অসুখ'সহ দারুণ সব পাঠকপ্রিয় কবিতার বই। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বোধ, দ্য শুজ, প্রযত্নের পাশাপাশি' নির্মাণ করেছেন 'গহীনের গান' এর মতো ব্যতিক্রমধর্মী পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও। জিতেছেন জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রকার পুরস্কার, এসবিএসপি-আরপি ফাউন্ডেশন সাহিত্য পুরস্কার, পশ্চমিবঙ্গের চোখ সাহত্যি পুরস্কার, শুভজন সাহিত্য সম্মাননা ও এক্সিম ব্যাংক- অন্যদিন হুমায়ূন আহমদে সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯। তাঁর জন্ম ১৯৮৪ সালের ২১ মে, মাদারীপুর জেলার, কালকিনি থানার কয়ারিয়া গ্রামে।
Tags
Books