সহবাসের স্থায়িত্ব কত সময় হওয়া উচিত | গর্ভাবস্থায় সহবাস | সহবাসের দোয়া বাংলায় | সহবাসের দোয়া
সহবাসের স্থায়িত্ব কত সময় হওয়া উচিত:
যুবকদের কাছ থেকে প্রায়ই এ ধরনের প্রশ্ন আসে প্রায়ই শুনা যায়, মিলনের স্থায়িত্ব কত সময় হওয়া উচিত? কিন্তু বিষয় হলো এর ধরাবাধা কোনো সময় নেই। কারণ এটি বলতে গেলে পুরুষের সক্ষমতার উপরই অধিকাংশ নির্ভরশীল। তবে বিশেষজ্ঞরা এর সময়সীমার প্রতি কিছুটা ইঙ্গিত করেছেন তা হলো :
সর্বোত্তম সহবাসের সময়-ব্যপ্তি ৭ (সাত) থেকে ১৩ (তের) মিনিট পর্যন্ত হয়ে থাকে। বলা হয় ৩ (তিন) থেকে ৭ (সাত) মিনেটের সহবাস মোটের উপর “পর্যাপ্ত” কিন্তু ৩ মিনেটের কম সময় “খুব কম সময়” এবং ১৩ মিনিটের বেশি সময় মিলন “খুব লম্বা সময়”। গবেষকরা প্রমানপেয়েছেন – ৩ (তিন) মিনেটের ভালবাসাপুর্ন শাররীক মিলনই ‘পর্যাপ্ত’। মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩ থেকে ১৩ মিনিটই যথেষ্ট। কিন্তু পুরুসদের ক্ষেত্রে ধরাবাধা নিয়ম নাই।
স্বামী-স্ত্রী মিলনের আগে যে দোয়া পড়তে হয়-
بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমার নামে (যৌন মিলন বা সহবাস) আরম্ভ করছি, তুমি আমাদের (স্বামী-স্ত্রী উভয়ের) কাছ থেকে শয়তানকে দূরে রাখ। আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবেন, সে সন্তানকেও শয়তান (যাবতীয় আক্রমণ) থেকে দূরে রাখ।’
গর্ভাবস্থায় যৌন মিলন নিরাপদ ?
অন্তঃসত্বা স্ত্রীর সাথে সহবাস বা যৌন মিলন করলে অনাগত সন্তানের কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা । বিশেষ করে নারীদের মনেই বেশি সন্দেহ জাগে যে গর্ভবতী অবস্থায় মিলন করা যায় কিনা। উত্তর প্রায় সবসময়/বেশিরভাগ নারীর জন্য ‘হ্যাঁ’। গর্ভবতী হবার প্রথম ৩ মাস ও শেষ ৩ মাস অবশ্যই সেক্স করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। শুধু ৪র্থ, ৫ম, ও ৬ষ্ঠ মাস যৌনমিলন করা যবে, তবে অবশ্যই নিন্মুক্ত নিয়ম মেনে। গর্ভাবস্থায় ছয় থেকে সাতমাসে নারীর যৌন আকাঙ্খা বেড়ে যায়। তখন যৌন মিলন না হলে নারীর মানসিক ক্ষতি হতে পারে। তাই, সেক্স ছাড়া এই সময় “রোমাঞ্চের” মাধ্যমে স্ত্রীকে তৃপ্ত রাখতে হবে। সাধারণত যে কারণে গর্ভবস্থায় সেক্স করা উচিত নয়:
(১) গর্ভাবস্থায় সেক্সের সময় সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকলে বা ধাক্কা লাগলে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(২) গর্ভাবস্থায় সহবাসের ফলে পেটে ব্যথা ও মৃদু রক্তপাত হতেই থাকে।
(৩) অনেক সময় অসুরক্ষিত সহবাসের ফলে গর্ভপাত না হলেও শিশু বিকলাঙ্গ জন্মাতে পারে।
কি কি কারনে গর্ভকালীন সময় সেক্স করা থেকে বিরত থাকতে হবে?
(১) কোন কারনে যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরন হলে
(২) গর্ভকালীন সময়ে অল্প কিংবা বেশি রক্তক্ষরন পরিলক্ষিত হলে শাররীক মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রাক প্রসব বেদনাঃ বীর্যের সংস্পর্শে প্রোস্টাগ্লেনডিনস্ সংকুচিত হবার সম্ভাবনা থাকে যা প্রাক-প্রসব-বেদনাকে ঝামেলাপূর্ণ করে তুলতে পারে। আপনার কিংবা আপনার স্বামীর কোন প্রকার যৌন-সংক্রামন ব্যাধি থাকলে গর্ভকালীন শাররীক মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে।
জরায়ুর গলদেশে সমস্যা থাকলেঃ যদি আপনার জরায়ুর মুখ অকালে খুলতে শুরু করে তাহলে শারীরিক মিলন করলে রোগ সংক্রমনের সমুহ সম্ভাবনা থাকে।
গর্ভের ফুল/অমরা সমস্যায় থাকলেঃ যদি গর্ভের ফুল/অমরা জরায়ুমুখ আংশিক কিংবা সম্পুর্নরূপে ঢেকে ফেলে তাহলে শাররীক মিলনের ফলে রক্তপাত এবং প্রাক প্রসব বেদনা শুরু হয়ে যেতে পারে। যদি আপনার ডাক্তার আপানাকে গর্ভকালীন সহবাস থেকে বিরত থাকতে বলে তাহলে খুঁজে বের করুন ডাক্তার কি বলতে চেয়েছে? ডাক্তার কি সেক্স করা থেকে বিরত থাকতে বলেছে নাকি যৌন উত্তেজনা/তৃপ্তি থেকে বিরত থাকতে বলেছে? আর যদি ডাক্তার বারণ করে তাহলে অবশ্যই জেনে নিবেন – কত সময়ের জন্য বারণ করেছেন? উদাহরন স্বরূপঃ অনেক নারীর গর্ভধারনের প্রাথমিক ধাপে (প্রথম তিনমাস সময়ে) যদি অল্প পরিমান রক্তক্ষরণ হয় তাহলে ডাক্তার বলেন শেষ বার রক্তক্ষরণের পর কমপক্ষে এক সপ্তাহ সময়কাল মিলন/অন্যকোন ভাবে যৌন তৃপ্তি থেকে বিরত থাকেন।
গর্ভাবস্থায় সহবাস কিভাবে নিরাপদ করা যায়?
অনেক দম্পতির জন্য গর্ভাবস্থায় মিলন নিরাপদ হলেও এটা সহজ মনে হয় না। যৌন মিলনের জন্য আপনাকে অন্য ধরণের অবস্থান চেষ্টা করে দেখা লাগতে পারে। গর্ভাবস্থায় আপনার সঙ্গী আপনার উপরে স্থান নিয়ে মিলন করতে গেলে আপনি সমস্যা অনুভব করতে পারেন। এটা কেবল আপনার পেট এর আকারের জন্য নয় বরং আপনার স্তন সেই সময় অনেক নাজুক থাকে। আপনার সঙ্গী অতিরিক্ত প্রবেশ করালেও আপনি সমস্যা অনুভব করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে আপনি কাত হয়ে শুতে পারেন অথবা আপনার সঙ্গী আপনার সামনে অথবা পিছনে থেকে সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারেন।
তাছাড়া ‘ওরাল সেক্স’ গর্ভাবস্থায় নিরাপদ। কিন্তু এই ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার সঙ্গী যোনিপথে কোন ফুঁ না দেয়। এর ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্ত নালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে যা আপনার এবং আপনার সন্তান এর জন্য হুমকি সরূপ। পায়ু পথে মিলন করা থেকে বিরত থাকা ভাল। কারন এর ফলে ব্যাকটেরিয়া আপনার পায়ু হতে জরায়ু পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। এ সময় যৌনাঙ্গে কোন লুব্রিকেটিং তেল বা জেল লাগানো উচিত নয়। কারন এর ফলে চুলকানি বা অ্যালার্জি হতে পারে। মিলনের পর যৌনাঙ্গ ভালোভাবে পরিস্কার করে নেয়া উচিত। আপনার কিংবা আপনার স্বামীর কোন প্রকার যৌন-সংক্রামন ব্যাধি থাকলে গর্ভকালীন শাররীক মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে।
গর্ভবতী অবস্থায় নারীর জন্য আরামদায়ক যৌন আসন ভঙ্গি সমুহঃ
গর্ভকালীন সময় অন্য সময়কালের মত আসনভঙ্গিতে সেক্স করা যায়না। এটি মা এবং সন্তান উভয়ের জন্য ক্ষতির কারন হতে পারে। তাই এই সময়কালে সেক্স আসন সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরী।
নারী উপরেঃ এ আসনে নারীর নিয়ন্ত্রন থাকে কত গভীরতায় লিঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হবে। এ পদ্ধতিতে বেশিরভাগ কার্যক্রম নারী নিজের ইচ্ছে/সুবিধা মত করতে পারেন। এই ভঙ্গিতে গর্ভের পুরো সময়কাল এমনকি শেষ সময়েও নারী অনেক কম ঝুকিতে থাকেন।
স্পুনিং/একপাশে কাত হয়ে শুয়ে মিলনঃ এ আসনে নারী হাটেু ভেঙ্গে পাশে কাত হয়ে শুবেন এবং স্বামী স্ত্রীর পিছেনে থেকে সেক্স করবেন। স্পুনিং ভাল ভাবে কাজ করে যদি পুরুষ নারীর ঊরূর মাঝে দিয়ে লিঙ্গ সঞ্চালন করেন। এ পদ্ধতিতে তলপেটে কোন চাপ পড়ে না এবং আস্তে আস্তে মিলন করার সুবিধা থাকে যা গর্ভবতীর জন্য জরুরী।
হাঁটু এবং হাতে ভরঃ এই ভঙ্গিটি দেখতে হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটার সময় শরীরের যে রকম আকার হয় সেরকম। এই ভঙ্গিটিও গর্ভবতী নারীর জন্য ভাল – এতে পেটে কোন প্রকার চাপ পড়েনা। আমাদের দেশে শুধুমাত্র বিভিন বিষয় এ জ্ঞান না থাকার ফলে হবু মায়ের বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়া সহ বিভিন্ন রকম বিপদে পড়ে । স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ের এ সময়ে ধৈর্য্য ধরা উচিৎ। আগত বাচ্চা ও মাদের জন্য শুভকামনা ।
Tags
Islamic Info