২৬ শে মার্চ রচনা | 26 শে মার্চ রচনা
রচনা : ২৬ শে মার্চ অথবা , স্বাধীনতা দিবস অথবা , বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস
- ভূমিকা
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস
- স্বাধীনতা দিবসের ঐতিহাসিক পটভূমি
- স্বাধীনতা অর্জনের মুক্তিযুদ্ধ
- স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য
- স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনের মূল্যায়ন
- স্বাধীনতার স্বপ্ন
- স্বাধীনতার বর্তমান বাস্তবতা
- সমাজ - প্রগতি ও স্বাধীনতা
- উপসংহার
ভূমিকা : বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস একটি ঐতিহাসিক ও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা । আমাদের জীবনে এ দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম । এটি নব প্রত্যয় ও শপথ গ্রহণের দিন । ১৯৭১ সালের ২৬ - এ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । দেশকে স্বাধীন করার জন্য বাঙালি নিয়েছিল দৃপ্ত শপথ । পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণের নাগপাশ থেকে নিজেদের মুক্ত করার জন্য এবং আপন পরিচয় খোঁজার নিমিত্তে সেদিন বাঙালি গর্জে উঠেছিল । দীর্ঘদিনের শোষণ ও নিপীড়ন ভেঙে আবহমানকালের গৌরবময় সাহসিকতার ইতিহাস যেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেদিন এ জাতির ভেতরে । তাই সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করে সেদিন বাঙালি অর্জন করেছিল স্বাধীনতার সোনালি সূর্য ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস : বাংলাদেশের জন্য স্বাধীনতা দিবস আত্মত্যাগ ও আত্ম - অহংকারের একটি দিন । ১৯৭১ সালের ২৬ - এ মার্চ এদেশের মানুষ পৃথিবীর বুকে নতুন একটি মানচিত্রের সৃষ্টি করে । বাঙালির মুক্তির সমস্ত আকাঙ্ক্ষা সমন্বিত হয়েছিল সেদিন । আকাশের নক্ষত্ররাজির মতো ছোটো - বড়ো হাজারো ঘটনার জন্ম হয়েছিল সেদিন । সমস্ত জাতি যেন একই অঙ্গীকারে শপথ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে । রক্তস্নাত হয়ে এ সবুজ - শ্যামল বাংলা অন্যরূপ পেয়েছিল সে সময় । বাঙালির সে ক্ষণের বীরত্বের ইতিহাস চর্চিত হয়েছে বহুভাবে বহুস্থানে । এ ইতিহাস আজন্মকাল ধরে বাঙালির হৃদয়ে জাগরূক থাকবে ।
স্বাধীনতা দিবসের ঐতিহাসিক পটভূমি : ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান দুটি রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয় ; তবে সে সময় এই ভূখণ্ডের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান । দীর্ঘদিনের ইংরেজ শশাষণ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতার সুবাতাস পাবে তা ছিল এই অঞ্চলের মানুষের একান্ত প্রত্যাশা , কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হলেও এ অঞ্চলের মানুষের শোষণমুক্তি ঘটেনি । স্বীয় রাষ্ট্রের অত্যাচার ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ । পাকিস্তানিদের প্রকৃত চেহারা উপলদ্ধি করে । মানুষের মনে ধীরে ধীরে দানা বেঁধে ওঠে স্বাধীনতার স্বপ্ন । অবশেষে ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন । ১৯৭১ সালের ২৫ - এ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে । মধ্যরাতের পর হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । গ্রেফতারের পূর্বেই , অর্থাৎ ২৬ - এ ।
মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । এরপর চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ - এ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নামে প্রচারিত হয় স্বাধীনতার ঘোষণা । স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রাম স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রাম একদিনে সংঘটিত হয়নি ; বহুদিন ধরে ধীরে ধীরে এ সংগ্রাম মহিরুহ রূপ পেয়েছে । ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম সোপান । ইতিহাসবিদদের মতে , ভাষা আন্দোলনেই স্বাধীনতার বীজ নিহিত ছিল । এরপর ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন , ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন , ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা প্রণয়ন ও তৎপরবর্তী আন্দোলন , ১৯৬৯ সালের গণ - অভ্যুত্থান প্রভৃতি ঘটনার মধ্যেই স্বাধীনতার স্বপ্ন নিহিত ছিল । ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে এদেশের মানুষ ভোট দিয়েছিল । কিন্তু শাসকদের চক্রান্তে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারেনি তারা । সেই প্রবনা ও পরবর্তীকালে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম গণহত্যাই বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের আন্দোলনকে চরমতম রূপ দেয়
স্বাধীনতা অর্জনের মুক্তিযুদ্ধ : স্বাধীনতা অর্জনে এদেশের মানুষ সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে । মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে এদেশের ত্রিশলাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে , অত্যাচারিত হয়েছে- সম্ভ্রম হারিয়েছেন কয়েক লক্ষ মা - বোন । আলবদর , আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা পাকিস্তানিদের দোসর হিসেবে কাজ করেছে । এদেশের সর্বস্তরের মানুষ যখন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে , তখন দেশীয় এই রাজকারদের তৎপরতায় বহু মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছে , সম্ভ্রম হারিয়েছে , প্রাণ দিয়েছে । বহু মুক্তিযোদ্ধাদের নিজেরা হত্যা করেছে , পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছে এই রাজাকার বাহিনী । দেশের অভ্যন্তরে এই শত্রুদের বিনাশ করে স্বাধীনতা অর্জন করতেই একটি সামরিক পরিকল্পনা করে তৎকালীন ( ১৯৭১ সালের ১০ ই এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগরে গঠিত হয় অস্থায়ী সরকার ) অস্থায়ী সরকার । মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত হন কর্নেল এমএজি ওসমানী । তাঁর নেতৃত্বে এবং বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের মিত্রবাহিনীর তৎপরতায় ও সহযোগিতায় ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এদেশ স্বাধীন হয় ।
স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য : এ জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য অপরিসীম । এ দিনটি বাঙালির জীবনে বয়ে আনে আনন্দ - বেদনার অম্ল - মধুর অনুভূতি । একদিকে হারানোর কষ্ট অন্যদিকে প্রাপ্তির আনন্দ । শেষ পর্যন্ত সর্বস্ব হারিয়ে যেন স্বাধীনতা প্রাপ্তির অপার আনন্দটা বড় হয়ে ওঠে প্রতিটি বাঙালির কাছে । আমাদের জন্য স্বাধীনতা দিবসের মূল তাৎপর্য হলো— এটি আমাদের ত্যাগ ও মুক্তিসংগ্রামের গৌরবময় একটি দিন । এদিন আমাদের আত্মপরিচয়ের গৌরবে উজ্জ্বল ; ত্যাগে ও বেদনায় মহীয়ান । এই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এ দেশের বতি নিপীড়িত সাধারণ মানুষ মুক্তির নতুন দিশা অর্জন করেছিল । স্বাধীনতা অর্জনের জন্যে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে ইতিহাস রচিত হয়েছে তা এদেশের মানুষকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে যুগে যুগে প্রেরণা জোগাবে । তাই প্রতিবছর ২৬ - এ মার্চ এলেই বাঙালি নতুন শপথ গ্রহণের মাধ্যমে উজ্জীবিত হয় ।
স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনের মূল্যায়ন : স্বাধীনতার মূল অর্থ হলো অধীনতা থেকে মুক্তি ; আত্মোন্নয়নের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে নিজেকে বিকশিত করার সুযোগ লাভ । প্রতিটি স্বাধীনতা দিবস আমাদের জীবনে এনে দেয় নতুন সম্ভাবনা । আমরা নিজেদের ভেতরে স্বাধীনতার স্বাদ কতটা অনুভব করতে সমর্থ হচ্ছি তা মূল্যায়ন করি । স্বাধীনতার সুফল আমরা দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারছি কিনা তাও আমরা ভেবে দেখি । তবে এক্ষেত্রে আমাদের যেমন আশা জাগানোর কিছু দিক রয়েছে তেমনি অনেক দিক রয়েছে হতাশার । স্বাধীনতার সুফল সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারলেই কেবল শহিদদের আত্মত্যাগ সার্থক হতে পারে ।
স্বাধীনতার স্বপ্ন : “ এই দেশের বাঁশবাগানে জোছনা দেখতে চাইব বিভেদ ভুলে আমরা সে পথেই অগ্রসর হব " স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল একটি শোষণমুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার রাষ্ট্র প্রবর্তন করা । মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সবাইকে স্বনির্ভর করেছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন । জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই লক্ষ্য নিয়েই দেশ গঠন শুরু করেছিলেন । কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট সামরিক বাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন একনায়ক সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে । ১৯৯০ - এ স্বৈরাচার পতনের মধ্য দিয়ে দেশে পুনরায় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা সূচিত হয় । আশার কথা এই যে , বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রয়াসের মধ্য দিয়ে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে ।
স্বাধীনতার বর্তমান বাস্তবতা : চেতনার কুৎসিত রাজনৈতিক ব্যবহার দেখে আতঙ্ক হয় পরবর্তী প্রজন্মের জন্য না জানি চেতনা অর্থ শুধুই একটি মতের মানুষের নিরঙ্কুশ আধিপত্য , শোষণ , নিপীড়ন আর স্বৈরতন্ত্র হয়ে ধরা দেয় । যে মুক্তিযুদ্ধ একদিন একতাবদ্ধ করেছিল ৭ কোটি মানুষকে , রাজনীতির ঘৃণ্য চক্রে তা আজ স্পষ্টভাবে বিভাজিত করেছে ১৬ কোটি মানুষকে । কেবল রাজনীতি নয় , মানুষের চেতনায় এসেছে আমূল পরিবর্তন।দেশ সেবার নামে দেশ লুটপাট এখন নিত্য । তবুও উন্নতির চূড়ায় উঠতি বাংলাদেশের ক্রমোন্নতির ভিত স্বাধীনতা।ক্ষুধা , দারিদ্র্য , নিরক্ষরতা , বেকারত্বের দুর্বিপাকে এখনও যেন ঘুরপাক খাচ্ছে বাঙালি । দেখা যায় , আজো মূল্যবোধের অবক্ষয় , হিংসাত্মক অপরাজনীতি , লেজুড় বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি কিংবা সীমাহীন দুর্নীতিসহ নানা বিষয়েই যেন স্বাধীনতার স্বপ্ন আজও বাস্তবায়নের লাগাম টেনে ধরে আছে । স্বাধীনতার চেতনা দিনে দিনেই ম্লান হয়ে আসছে আর আমরা ক্রমশই যেন পিছিয়ে যাচ্ছি । সংকট গুলো উত্তরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আশার কথা হলো , আমাদের বর্তমান প্রজন্ম স্বাধীনতার ব্যাপারেই যথেষ্ট আগ্রহী । এই প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেই এই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দীক্ষায় দীক্ষিত করতে হবে । মহান মুক্তিযুদ্ধে শত্রুকে প্রতিহত করে দেশ রক্ষার লক্ষ্যে সেই ৭ কোটি বাঙালির মুক্তির চেতনাই পারে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে পৃথিবীর বুকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে ।
সমাজ - প্রগতি ও স্বাধীনতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন , “ ২৬ মার্চ আমাদের জাতির আত্মপরিচয় অর্জনের দিন । পরাধীনতার শিকল ভাঙার দিন । লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন । ” মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গৌরবের ইতিহাস , অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে জেতার ইতিহাস । এ লড়াই শুধুমাত্র একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ড লাভের লড়াই ছিল না , এ লড়াই ছিল অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক , সামাজিক এবং জাতিগত বৈষম্য আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাঙালির ভাষা , সংস্কৃতি , ইতিহাস , ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার , লালন করার , চর্চা করার লড়াই । শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে হাজার মাইলের ব্যবধানে অবস্থিত দুটি ভূখণ্ড মিলে যে একটি রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না তার জ্বলন্ত উদাহরণ ছিল এই মুক্তিযুদ্ধ । ৭১ এর যুদ্ধ ছিল গণমানুষের যুদ্ধ , তাদের দ্বারাই রচিত হয়েছে গৌরবের অমরগাঁথা , বিশ্বের বুকে জন্ম নিয়েছে স্বাধীন , সার্বভৌম এক রাষ্ট্র । এমন গৌরবের ইতিহাস একটি জাতির ভাগ্যে বারবার রচিত হয় না।সমাজের প্রগতিই হলো স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য । তার জন্য প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোয় দৃপ্ত শপথ গ্রহণ । দেশের সর্বস্তরের মানুষের মেধা ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলতে হবে উন্নয়নের নতুন মাইলফলক । প্রগতির পথে সমাজকে পরিচালিত করতে স্বাধীনতার মূল স্তম্ভগুলোকে লালন করতে হবে এবং সে অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা হতে হবে । এ পথে সাময়িক ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হলেও তা ভবিষ্যতে স্বাধীনতার বৃহদার্থকে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেবে ।
উপসংহার : মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীনতার অধিকারপ্রাপ্ত হয় । কিন্তু বর্তমানে দেশে ও বিশ্বে পরাধীনতাই যেন সবাইকে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে । আমাদের সমাজেও সুপ্তভাবে এই প্রক্রিয়াটি লক্ষ করা যায় । কিন্তু ভুললে চলবে না আমাদের স্বাধীনতা অনেক রক্তের দামে কেনা ; শহিদদের এই পবিত্র রক্তের দায় জাতি হিসেবে আমাদের সবারই । সেই দায় শোধ হতে পারে কেবল স্বাধীনতাকে সবার জন্য ভোগ্য করে তোলার মাধ্যমে । এই প্রত্যয় নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে ভবিষ্যৎকালের পথে । স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য বেশি প্রয়োজন সংগ্রাম ও শক্তির । আর স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন প্রযুক্তি , কৌশল , ঐক্য ও ন্যায়বোধ । এ ছাড়া স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে জ্ঞান , বুদ্ধি , শিক্ষা ও সৎ বিবেচনাকে কাজে লাগানো একান্ত অপরিহার্য । মূলত যথেষ্ট সচেতন ও সংঘবদ্ধ না হলে স্বাধীনতাকে রক্ষা করা যায় না । স্বাধীনতা রক্ষার জন্য স্বাধীনতাকে মর্যাদা দিতে হয় এবং সদা সতর্ক থাকতে হয় । তাই স্বাধীনতার মর্ম উপলব্ধি করে একে রক্ষা করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য মনে করা উচিত । স্বাধীনতা - সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের এই মৌল চেতনা সবাইকে অনুপ্রাণিত করুক- এটাই মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রত্যাশা ।