ভাষা আন্দোলন হতে ১৯৭০ এর নির্বাচন পর্যন্ত রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের গুরুত্ব বিশ্লেষণ | Class 7 BGS Assignment |Class 7 Assignment Solution

ভাষা আন্দোলন হতে ১৯৭০ এর নির্বাচন পর্যন্ত রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের গুরুত্ব বিশ্লেষণ | Class 7 BGS Assignment |Class 7 Assignment Solution



ভাষা আন্দোলন হতে ১৯৭০ এর নির্বাচন পর্যন্ত রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের গুরুত্ব বিশ্লেষণ, ছক তৈরিপূর্বক ১৯৫২-১৯৭০ সাল পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাক্রম করে রাজনৈতিক সময় উল্লেখ ধারাবাহিকভাবে লিখবে,ছক থেকে যেকোনো একটি ঘটনা নির্বাচন করে তার ধারাবাহিক বর্ণনা

ভাষা আন্দোলন হতে ১৯৭০ এর নির্বাচন পর্যন্ত রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের গুরুত্ব বিশ্লেষণ | Class 7 BGS Assignment |Class 7 Assignment Solution



১৯৬৬ সালে সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক ৬ দফা। ঐতিহাসিক ৬ দফার প্রবক্তা জাতির | পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পূর্ব । বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে আন্দোলন ও সংগ্রাম সুস্পষ্ট রূপ
লাভ করে ছয় দফার স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামায়। ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলসমূহের এক। সম্মেলনে যোগদান করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। সেখানে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে পূর্ব সেখানে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন।

দফাগুলো হল-

প্রথম দফা : লাহোরে প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তানের জন্য সত্যিকার অর্থে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে হবে। সরকার হবে সংসদীয় পদ্ধতির । সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে সকল প্রাপ্ত বয়স্কের ভোটে জাতীয় ও প্রাদেশিক আইনসভাগিলো

দ্বিতীয় দফা : যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের হাতে থাকবে দেশরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়। অবশিষ্ট সকল বিষয় প্রদেশের হাতে থাকবে ।

তৃতীয় দফা : দেশের দুই অঞ্চলের জন্য দুটি পৃথক অথচ সহজ বিনিময়যোগ্য মুদ্রা চালু থাকবে অথবা দেশের দুই অঞ্চলের জন্য একই মুদ্রা থাকবে। তবে সংবিধানে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে এক অঞ্চলের মুদ্রা ও মূলধন অন্য অঞ্চলে পাচার হতে না পারে।

চতুর্থ দফা : সকল প্রকার ট্যাক্স, খাজনা ও কর ধার্য এবং আদায়ের ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে তবে কেন্দ্রিয় সরকারের ব্যয় নির্বাহের জন্য আদায় কৃত অর্থের একটি অংশ কেন্দ্রিয় সরকার পাবে ।

পঞ্চম দফা : বৈদেশিক বাণিজ্যি ও বৈদেশিক মুদ্রার উপর প্রাদেশিক সরকারের ক্ষমতা থাকবে। সকল প্রকার বৈদেশিক চুক্তি ও সহযোগিতার ব্যাপারে প্রাদেশিক সরকার দায়িত্ব পালন করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা যুক্তিযুক্ত হারে উভয় সরকার কর্তৃক মেটানো হবে।

৬ষ্ঠ দফা : আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আঞ্চলিক সরকারগুলো স্বীয় কর্তৃত্বাধীন আধা সামরিক বাহিনী (প্যারা মিলিশিয়া) গঠন ও পরিচালনা করতে পারবে।

ছয় দফা কর্মসূচির মূল আবেদন ছিল পূর্ব পাকিস্তান শুধু একটি প্রদেশ নয় বরং একটি স্বতন্ত্র স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল । সকল প্রকার শোষণ ও বঞ্চনার অবসান ঘটনা-ই ছিল এর লক্ষ্য।

গ) আমাদের জাতীয় জীবনে উক্ত ঘটনাটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে হবে। ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত দিকগুলো থাকতে হবে *বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ * অর্থনৈতিক বৈষম্য নিরসন *স্বাধীকার আন্দোলন *রাজনৈতিক বিজয়

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনের গােড়াপত্তন হয়েছিল মূলত ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ৫২’তে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পেলেও স্বাধীনতার স্বাদ তখনও আমরা পাইনি। অবশেষে ১৯৭১ সালে আমরা পেলাম স্বাধীনতার স্বাদ। স্বাধীনতা পর্যন্ত সময়কালে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনের পিছনে সাক্ষী হয়ে আছে অনেক কাল।

বাঙালির জাতিয়তাবাদের বিকাশ : ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে মার্চ মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ঘােষণা দেন এতে পূর্ব পাকিস্তানে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ফলে ১১ই মার্চ ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়। ধর্মঘট পালনকালে শেখ মুজিবসহ আরও কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মীকে সচিবালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়। আন্দোলন আরও জোরদার হতে থাকে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে। ২০শে ফেব্রুয়ারি রাতে সভা করে ছাএরা ১৪৪ ধারা ভেঙে | মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২২শে ফেব্রুয়ারি পুলিশ ছাত্র জনতার মিছিলে গুলি বর্ষণ করে। সালাম-রফিক-বরকতসহ অনেকেই নিহত হন। ভাষার জন্য তাদের প্রান বৃথা যায় নি। অবশেষে ১৯৫৪ সালের ৭ মে মুসলিম লীগের সমর্থনে বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দেয়া হয় । ফলে বাঙালি জাতিয়তাবাদের স্বাদ পায় ।

শোষনের থেকে মুক্তি : এ দেশের মানুষের অধিকার আদায় এবং শােষণবঞ্চনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বহুবার গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন। ১৯৬৬ সালে তিনি পেশ করেন বাঙালি জাতির ঐতিহাসিক মুক্তির সনদ ছয় দফা। এ সময় নিরাপত্তা আইনে তিনি বারবার গ্রেফতার হতে থাকেন। আজ গ্রেফতার হয়ে আগামীকাল জামিনে মুক্ত হলে সন্ধ্যায় তিনি আবার গ্রেফতার হন। এরকমই চলে পর্যায়ক্রমিক গ্রেফতার। তিনি | কারারুদ্ধ জীবনযাপন করতে থাকেন। তাঁকে প্রধান আসামি করে দায়ের করা হয় আগরতলা মামলা।

স্বাধিকার আন্দোলন : আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি ৫ তারিখে দফা দাবি পেশ। করে যার মধ্যে শেখ মুজিবের ছয় দফার সবগুলােই দফাই অন্তর্ভুক্ত ছিল। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের | প্রস্তুতি শুরু হয়। যা পরবর্তীতে গণ আন্দোলনের রূপ নেয়। এই গণ আন্দোলনই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান নামে পরিচিত। মাসব্যাপী চলতে থাকে আন্দোলন, কারফিউ, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ, পুলিশের গুলিবর্ষণ। পরবর্তীতে এই আন্দোল চরম রূপ ধারণ করলে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান তাদের রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে গােলটেবিলে বৈঠকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

রাজনৈতিক বিজয় : বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক। সামরিক শাসন এবং পাকিস্তানী সামরিক গণতন্ত্র বিরােধী অপশাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনের পর আসে এই নির্বাচন। নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টিতে এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসনে জয় লাভ করে আওয়ামী লীগ। আর এভাবেই ধীরে ধীরে সংঘটিত হয় রাজনৈতিক বিজয়।



Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form