Jaago Bahey Anthology Series Review and Spoilers - IMDb Rating, Download Chorki
IMDb Rating: Not yet Published
"শব্দের খোয়াব"
১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ! ঢাকার রেসকোর্স মায়দানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষনা দিলেন, 'Urdu and only Urdu shall be the state language of Pakistan' অর্থাৎ 'উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা' প্রতিবাদ করায় গ্রেফতার হন অনেক প্রতিবাদী ছাত্র। পুনরায় মার্চ মাসের ২৪ তারিখে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সেই একই ঘোষণার পুনরাবৃত্তি করলেন কার্জন হল সমাবর্তন অনুষ্ঠানে; ছাত্রদের 'নো' 'নো' প্রতিবাদ উচ্চারিত হলে থমকে যান জিন্নাহ সাহেব!
"শব্দের খোয়াব"
১৯৫২ সালে উত্তাল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজপথ। নিজের ভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার আদায়ের দাবিতে রাজপথে ছাত্র-জনতা। এমনই একদিন সকালবেলা অফিসে যাবার সময় মিছিলের কারনে আটকে পড়েন চাকুরীজীবি ইলিয়াস। সেখানেই পুলিশের হাত থেকে বাচার জন্য আশ্রয় নেয়া একটি ছাত্রের সাথে একই জায়গায় আশ্রয় নেয়া দুই বয়সের দুইজন বাঙালির কিছু কথোপকথনের মাধ্যমে নির্মাতা সিদ্দিক আহমেদের নির্মান এবং ইলিয়াস চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী ও ছাত্রের চরিত্রে আলী ওয়াহাব সৌহার্দ্য তাদের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে আমাদের যেনো নিয়ে যান ১৯৫২ সালে।
‘শব্দের খোয়াব’ নামটার কারনে একটু বেশি আগ্রহ নিয়ে এই ২৭ মিনিটের ফিকশনটি দেখতে বসা। হ্যা সাথে ট্রেলার দেখে কনটেন্ট সম্পর্কে কিছুটা আইডিয়া পাওয়া এবং দেশের অন্যতম গুনী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর কাস্টিং এই ফিকশন দেখার আগ্রহ বাড়িয়েছে অনেকখানি। মোটেও হতাশ করেনি ‘শব্দের খোয়াব’। উল্টো এতো সল্প সময়ে অল্প কিছু চরিত্র, সংলাপ আর গুনী অভিনয় শিল্পীদের দক্ষ অভিনয় যেনো ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো বাঙালীর অধিকার আদায়ের সেই প্রথম যুদ্ধে।
গল্পটি সরল এবং খুব সাধারণভাবেই তুলে ধরা হয়েছে। একটি এক্সপোর্ট - ইমপোর্টের অফিস। যেখানে অফিসের প্রধান কর্তা উর্দু ভাষায় কথা বলেন বাকি সব কর্মচারী বাংলায় কথা বলা ছাপোষা বাঙালী। একমাসের বেধে দেয়া সময়সীমার মধ্যেই তাদের শিখতে হবে উর্দু যদি চাকরি বাচাতে চায়। এমন অবস্থায় মধ্যবিত্ত বাঙালি কর্মচারীরা পড়েন বিপদে। এই বয়সে উর্দু ভাষা রপ্ত করার ব্যর্থ চেস্টাও করেন তারা চাকরি বাচানোর উদ্দেশ্যে। তবে যে ভাষা না আসে বুকে এবং না আসে মুখে তা কিভাবে রপ্ত করবেন তারা!!
‘শব্দের খোয়াব’ এই সময়ে দাঁড়িয়ে একটি ব্যতিক্রমী নান্দনিক নির্মান একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ১৯৫২,১৯৭০ এবং ১৯৭১ এই তিনটি সাল আমাদের বাঙালীদের জীবনের সাথে মিশে থাকা তিনটি সময়কাল। আমাদের ভাষার অধিকার, অন্যায় দাবী মেনে না নেয়া এবং স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ত্যাগের মুক্তিযুদ্ধর মতো তিনটি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে অ্যান্থোলজিক্যাল সিরিজ ‘জাগো বাহে’ এর মাধ্যমে। সিরিজের প্রথম এপিসোড ‘শব্দের খোয়াব’ নিঃসন্দেহে দর্শকদের জন্য ভিন্ন কিছু নিয়েই হাজির হয়েছে। নির্মাতা সিদ্দিক আহমেদ তার গল্পটি যথাযথ ভাবেই বলার চেস্টা করেছেন। সেলুলয়েডে সেই সময়কে তুলে ধরেছেন তিনি এবং তার টিম। সেই সময়ের পোষাক, আসবাবপত্র, ঘড়-বাড়ির ডিজাইন, ভালোবাসা এবং বোঝাপড়া থাকা সত্ত্বেও স্বামীকে আপনি বলা, লাঞ্চ নিয়ে আসা টিফিন ক্যারিয়ার এমনকি বাসনপত্রেও ১৯৫২কেই তুলে ধরা।
একটা সময় নিজের এক সহকর্মীকে অহেতুক চাকরি থেকে বরখাস্ত করা এবং অন্য এক সহকর্মীর আত্নহত্যা করার চেস্টা সাধাসিধে চঞ্চল চৌধুরীকে প্রতিবাদী করে তোলে। অন্যভাষা শেখার মধ্যে কোনো অপরাধ নাই কিন্তু জোর করে চাপিয়ে কেনো দিতে হবে সেটা মানতে না পেরে তাই তিনি নিজেই ইস্তফা দেন চাকরি থেকে। তারপর কি ঘটে!?জানতে হলে ‘চরকি’তে দেখে নিতে পারেন ‘শব্দের খোয়াব’।
প্রবাদ আছে - ‘নগর পুড়লে দেবালয় এড়ায় না’। তাই ১৯৫২তে ছাত্রদের ভাষার দাবিতে যে মিছিল এবং সমাবেশ শুরু হয়েছিলো তার আঁচ চাইলেই কি এড়িয়ে যেতে পেরেছিলো সেই সময়ের কোনো সাধারণ মানুষ!! না পারেনি। তাই তো তাদের সেই গা বাচিয়ে ঘরে না বসে থাকার ফলাফল আজ আমরা নিজেদের ভাষা বাংলায় কথা বলি।
অভিনয়ে লুৎফর রহমান জর্জ পুরোটা সময় উর্দুতে কথা বলেছেন। তার এক্সপ্রেশন, লুক পাকিস্তানি একজন অফিসারের মতোই লেগেছে। চঞ্চল চৌধুরীর স্ত্রীর চরিত্রে ফারহানা হামিদ সাবলীলতার ছাপ রেখেছেন। সাধারণ মধ্যবিত্ত একজন স্ত্রী হিসেবে স্নিগ্ধ একটা প্রভাব ফেলেছেন তিনি। একে আজাদ সেতু বিশ্বাসযোগ্য ভাবে তার চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছেন। আলী ওয়াহাব সৌহার্দ্য কয়েক মিনিটের উপস্থিতিতে নিজের ছাপ রেখেছেন। এবং সবশেষে ইলিয়াস চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী স্বাভাবিকভাবেই তার দক্ষ অভিনয় দিয়ে মুগ্ধ করেছেন বরাবরের মতোই। তার লুক, সংলাপ বলার ধরন, পোষাক, প্রথমদিকে ভীতু চাকরি হারানোর ভয়ে তটস্থ থাকা ছাপোষা কেরানি থেকে শেষদিকে সব দ্বিধা ভুলে সাহসী এক ব্যক্তি হিসেবে তার অভিনয় চোখ এবং মনকে প্রশান্তি দিবে।
১৯৫২, ১৯৭০, ১৯৭১ যে গল্প কখনো আমরা দেখিনি, বলিনি, শুনিনি!
Presenting The Official Trailer Of Anthology Series #JaagoBahey | Presented By Nagad | Releases 9th Dec #Worldwide Only On #Chorki.
Chanchal Chowdhury Rahman Lutfur George Gazi Rakayet Mostafa Monwar Intekhab Dinar Aparna Ghose Farhana Hamid A K Azad Shetu Mir Nauffel Jisan Ashok Bepari Hayatuzzaman Khan Apurba Majumdar Mostafizur Noor Imran Abdullah Al Santo সালেহ সোবহান অনীম Siddiq Ahamed Shukorno Shahed Dhiman #ShobderKhowab #LightsCameraObjection #BunkerBoy #BhashaAndolan #Muktijuddho #FilmFunFoorti
"লাইটস,ক্যামেরা, অবজেকশন" (জাগো বাহে পর্ব-২)
Review:
"লাইটস,ক্যামেরা, অবজেকশন" (জাগো বাহে পর্ব-২) |
'থিউরি কিন্তু আকাশ থেকে আসে না, আমার সিনেমার মতনই সেগুলোও কিন্তু জীবন থেকেই নেয়া'
"একটি দেশ
একটি সংসার
একটি চাবির গোছা
একটি আন্দোলন
একটি চলচ্চিত্র…"
স্লোগানটি মূলত অধিকার আদায়ের আন্দোলনের দিকেই ইঙ্গিত করে। আর এই অধিকার আদায়ের চেষ্টা করার জন্য জহির রায়হান যে মাধ্যমটি বেছে নিয়েছিলেন তা ছিলো সিনেমা। ১৯৭০ সালে একটি সিনেমা মুক্তি পায় যার নাম ছিলো 'জীবন থেকে নেয়া'। সিনেমাটিতে ছোট ছোট কিছু জিনিস একটি পরিবারের মাধ্যমে দেখিয়ে তিনি পাকিস্তানের তখনকার রাজনৈতিক আর সামাজিক বৈষম্যের প্রেক্ষাপটটি তুলে ধরেন। আর এই প্রেক্ষাপটই পাকিস্তান সেন্সরের বিষফোঁড়া হয়ে ওঠে এবং তারা সিনেমাটি আটকে দেয়।
'জাগো বাহে' এর দ্বিতীয় পর্বটি দেখে মনে হচ্ছিলো পাকিস্তান সেন্সর বোর্ডের সাথে জহির রায়হানের এক রকম বিতর্ক প্রতিযোগিতা চলছে। শেষের ১০-১২ মিনিট শুধুই চোখ আটকে থাকার মতো।
'লাইট,ক্যামেরা, অবজেকশন' এর মধ্যমে জহির রায়হান ও 'জীবন থেকে নেয়া' সিনেমার পেছনের গল্পকে পর্দায় তুলে এনেছেন সালেহ সোবহান অনীম।
গল্পটির পেছনের প্রেক্ষাপট হলো 'জীবন থেকে নেয়া' সিনেমাটি যে পাকিস্তান সেন্সর বোর্ডে আটকা পড়েছিলো মূলত সেটি নিয়ে। আর সেই সিনেমা আটকে দেয়ার পেছনে হাত ছিলো রাও ফরমান আলীর। নির্মাতা সালেহ সোবহান অনীম খুব সুন্দর করে বিষয়টি পর্দায় তুলে এনেছেন।
অসাধারণ একটি পর্ব ছিলো যেখানে বোরিং হওয়ার সুযোগ একেবারেই নেই বললেই চলে।
"জাগো বাহে" (ট্রেলার রিয়েকশন)
মুক্তি পেয়েছে অরিজিনাল সিরিজ 'জাগো বাহে' এর অফিশিয়াল ট্রেলার। সিরিজটি ৩টি পর্বে সাজানো। ৩টি পর্ব যথাক্রমে 'শব্দের খোয়াব' 'লাইটস, ক্যামেরা... অবজেকশন এবং সর্বশেষ 'বাংকার বয়'।
৩টি গল্পের মধ্যে প্রথম গল্পটি 'শব্দের খোয়াব' যেখানে দেখা যাবে চঞ্চল চৌধুরী, লুৎফুর রহমান জর্জ, ফারহানা হামিদ সহ আরও অনেককে। এই পর্বটি মুক্তি পাবে ৯ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার।
দ্বিতীয় পর্বটি হল 'লাইটস, ক্যামেরা.... অবজেকশন'। এই পর্বটিতে অভিনয় করেছেন মোস্তাফা মনোয়ার। তাকে দেখা যাবে জহির রায়হানের চরিত্রে। এছাড়াও আছেন ইন্তেখাব দিনার, গাজী রাকায়েত, অশোক বেপারি, অপর্না ঘোষ সহ আরও অনেকে। পর্বটি মুক্তি পাবে ১৬ই ডিসেম্বর।
তৃতীয় এবং সর্বশেষ পর্বটির নাম 'বাংকার বয়'। এই পর্বে দেখা যাবে মোস্তাফিজুর নূর ইমরানকে। পর্বটি মুক্তি পাবে ২৩ ডিসেম্বর।
ট্রেলারটির মধ্যে ছিলো ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময়কার কিছু ছাপ। ছিলো জহির রায়হানের অন্যতম নির্মাণ 'জীবন থেকে নেয়া' ছবির পোস্টার যেখানে লেখা একটি দেশ,একটি সংসার, একটি চাবির গোছা, একটি আন্দোলন। জীবন থেকে নেয়া সিনেমায় একদম শুরুর দিকে এই কয়টি লাইন স্ক্রিনে ভেসে উঠে। এটা আমরা কম বেশি সবাই জানি।
১:৩১ সেকেন্ডর ট্রেলারটি দেখে সিরিজটি দেখার আগ্রহ আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেলো। আশা করি সুন্দর একটি সিরিজ হবে।
Tags
Movie Review